এই প্রতিবেদনে আমরা খোঁজার চেষ্টা করবো, বাংলাদেশের অর্থনীতি আদৌ ভারতের প্রভাবমুক্ত হতে পারবে কিনা?
কীভাবে?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে, প্রথমেই দেখতে হবে বাংলাদেশ ভারত থেকে কী কী পণ্য আমদানি করে।
৯.৯১%- তুলার সূতা
৯.৯৩%- পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম (জ্বালানি)
৬.৮২%- তুলা
খাদ্য শস্যের মধ্যে গম, ভুট্টা এবং চিনি আমরা আমদানি করে থাকি।
পেট্রোলিয়াম উৎপাদনে বৃহৎ ১০ দেশের মধ্যে সৌদি আরব, রাশিয়া, চীন আছে। বাংলাদেশ চাইলেই এসব বিকল্প ব্যবহার করতে পারে। এছাড়া, তুলা ও সুতায় চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং পাকিস্তান আমাদের বিকল্প হতে পারে। বাংলাদেশ যদি এই ৩ সেক্টরে বিকল্প দেশ ব্যবহার করে, তবে ভারতের প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমন পরিস্থিতিতে তারাও বিকল্প কোন দেশে রপ্তানি করতে পারতেও পারে। তবে সুতার ক্ষেত্রে ভারতের গ্রাহক খুঁজতে বেগ পেতে হবে।
এবার আসি, আমরা যদি ভারতীয় পণ্য বয়কট করি তবে ভারত উল্টোটা আমাদের সাথে করতে পারে। তখন বাংলাদেশের অর্থনীতি কেমন হবে?
বাংলাদেশী পণ্যের বাজার- আমেরিকা (২০%), জার্মানি (১৫%), যুক্তরাজ্য (১১%) এছাড়া স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, জাপানে বাংলাদেশের গার্মেন্ট বিক্রিত হয়। ভারত আমাদের বাজার কখনোই ছিলো না। তাই বাংলাদেশের অর্থনীতি এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে না। সংযুক্ত চার্টটি দেখলে এ ব্যাপারে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
জনগণ বয়কটের ডাক দিলেই কী দেশের অর্থনীতি ভারতের প্রভাবমুক্ত করা সম্ভব?
এক কথায়, না। ভারত রিটেইল পণ্য যতটা না রপ্তানি করে, তার থেকে বহুগুণ বেশি জ্বালানি ও তুলা রপ্তানি করে বাংলাদেশে। এটির বিকল্প চ্যানেল তৈরি করে একমাত্র দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীরা বয়কটের ডাক দিলে ভারতকে অর্থনীতিতে কোণঠাসা করা সম্ভব। প্রতিযোগিতার এই বাজারে বিক্রেতা ক্রেতার মুখাপেক্ষী, ক্রেতা বিক্রেতার নয়। উপাত্ত আমাদের বলে, বাংলাদেশ ক্রেতার আসনে, আর ভারত বিক্রেতার আসনে। তাই বলা যেতেই পারে, বিকল্প চ্যানেল প্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভারতের প্রভাবমুক্ত হতে বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু প্রশ্নটা হলো- বিকল্প দেশগুলো ন্যায্য দামে পণ্য দিতে পারবে তো?